চলতি বছর দেশে জিকা ভাইরাসের ১১, চিকুনগুনিয়ার ৬৭ রোগী শনাক্ত করেছে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর)। গতকাল মহাখালীতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য তুলে ধরেন মহাপরিচালক অধ্যাপক মো. আবু জাফর। তিনি জানিয়েছেন, জিকা ও চিকুনগুনিয়া আক্রান্তের অধিকাংশই ঢাকার বাসিন্দা। ডেঙ্গু ভাইরাস শনাক্ত করতে গিয়ে এই দুটি ভাইরাসের রোগী মিলেছে। জিকা ও চিকুনগুনিয়ায় মৃত্যু হার কম। তাই আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।’ বেসরকারি হাসপাতালেও চিকুনগুনিয়া আক্রান্ত রোগী পাওয়া যাচ্ছে বলে জানিয়েছে হাসপাতালগুলো। নভেম্বরের প্রথম ২৭ দিনে বেসরকারি স্কয়ার হাসপাতালে ৩১৪ জন রোগী চিকুনগুনিয়ার চিকিৎসা নিয়েছেন। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরাও বলছেন, তাদের চেম্বারে চিকুনগুনিয়ার লক্ষণ-উপসর্গ নিয়ে রোগীরা আসছেন। মৃত্যু বেশি হওয়ার কারণ সম্পর্কে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. মো. আবু জাফর বলেন, ডেঙ্গু আক্রান্তদের হাসপাতালে নিতে দেরি করায় মৃত্যু বেশি। এ কারণে যাদের অবস্থা সংকটাপন্ন তাদের দ্রুত হাসপাতালে নিতে হবে। ঢাকায় যারা মারা গিয়েছেন তাদের মধ্যে ২০ থেকে ৪০ বছর বয়সি বেশি, যাদের বেশির ভাগই কর্মক্ষম ব্যক্তি। শিশু ও বয়স্কদের মৃত্যুহার বেশি চট্টগ্রামে। মৃত্যুর কারণ জানার জন্য আমরা ডেথ রিভিউ শুরু করেছি। সংবাদ সম্মেলনে সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির লাইন ডিরেক্টর ডা. হালিমুর রশিদ বলেন, ডেঙ্গু একটি মশাবাহিত ভাইরাসজনিত রোগ, যা মূলত গ্রীষ্মমণ্ডলীয় দেশগুলোতে হয়ে থাকে। সাধারণত ডেঙ্গু রোগটি শহরাঞ্চলের একটি রোগ, তবে বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশেও বর্তমানে গ্রামাঞ্চলে রোগটি ছড়িয়ে পড়েছে। বিভাগ ভিত্তিক ডেঙ্গু আক্রান্তের তথ্য উপস্থাপন করে তিনি বলেন, গত বছর ঢাকায় ডেঙ্গু শনাক্ত হয় ১ লাখ ৬৯ হাজার ৩২১ জন, এবার এখন পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছে ৫২ হাজার ৯৭৪ জন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডেঙ্গু বিষয়ক নিয়মিত প্রতিবেদনে জানা যায়, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরও তিনজনের মৃত্যু হয়েছে, এ সময় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৭০৫ জন। এর মধ্যে ঢাকা সিটি করপোরেশনের বাসিন্দা ২৪৪ জন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, এ বছর গতকাল পর্যন্ত সারা দেশে ৯৩ হাজার ৫৬ জন রোগী ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তাদের মধ্যে ৪৯৭ জনের মৃত্যু হয়েছে এই রোগে।