ডাস্টবিন ও সেকেন্ডারি ট্রান্সফার স্টেশন না থাকায় সন্ধ্যা হলেই বরিশাল নগরীর বিভিন্ন অলিগলি থেকে ময়লা-আবর্জনা এনে স্তূপ করে রাখা হয় প্রধান প্রধান সড়কে। এতে পথচারী, এলাকাবাসীসহ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মানুষ অসহনীয় দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। বিষয়টি স্বীকার করে বরিশাল সিটি করপোরেশন থেকে জানানো হয়েছে, বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করছেন তারা।
বরিশাল নগরীর নাজিরের পোল এলাকার ফল বিক্রেতা নুর ইসলাম বলেন, সন্ধ্যার পর নগরীর নাজিরের পোল থেকে জেলখানা মোড় পর্যন্ত সড়কের দুই পাশে অবস্থান নিয়ে প্রতিদিন পাঁচ শতাধিক বিভিন্ন যানবাহন ছেড়ে যায় বাবুগঞ্জসহ সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায়। এ ছাড়াও এখানে ভ্রাম্যমাণভাবে সবজি, মাছ ও ফল বিক্রি করা হয়। এ কারণে প্রতিদিন কয়েক হাজার লোক এ সড়ক দিয়ে যাতায়াত করে। কিন্তু সন্ধ্যা হলেই ভোগান্তি শুরু হয়। বিভিন্ন অলিগলি থেকে ময়লা-আবর্জনা এনে ফেলে রাখা হয় সড়কের ওপর। এতে সড়কের তিনভাগের দুই ভাগ ময়লা-আবর্জনায় আটকে যায়। তখন যানবাহন চলাচল করতে যেমন কষ্ট হয়, তেমনি দুর্গন্ধে পথচারী, ভ্রাম্যমাণ দোকানিসহ সবাই অতিষ্ঠ হয়ে পড়ে। সড়ক দখল হয়ে পড়ায় যানজট লেগে যায়। তখন বিভিন্ন যানবাহনের যাত্রীরাও ভোগান্তিতে পড়ে।
এভাবে নগরীর গুরুত্বপূর্ণ ও ব্যস্ততম বাংলাবাজার মোড়, নবগ্রাম রোড, চৌমাথা খালের পাশে, বিএম কলেজের সামনে ময়লার স্তূপ করে রাখা হয়।
পথচারী আরিফুল হক বলেন, ময়লা-আবর্জনা শুধু দুর্গন্ধই ছড়াচ্ছে না, একই সঙ্গে বিভিন্ন রোগজীবাণু ছড়িয়ে পড়ছে। এভাবে ময়লা-আর্বজনা ফেলা বন্ধ করা উচিত।
নগরীর সদর রোডের একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারের পরিচালক মো. জাকির হোসেন বলেন, এভাবে সড়কের মধ্যে ময়লা-আর্বজনা ফেলে পরিবেশ দূষণ করা হচ্ছে। নিরাপদ ও নির্দিষ্ট স্থানে ময়লা-আর্বজনা ফেলা উচিত। এ জন্য সিটি করপোরেশনের সংশ্লিষ্টদের এগিয়ে আসতে হবে। এ ছাড়াও জনগণকে সচেতন হতে হবে।
ক্যাবের বরিশাল জেলা সাধারণ সম্পাদক রণজিৎ দত্ত বলেন, আমি জানি বরিশাল নগরীতে প্রতিদিন ৫ টন ময়লা-আবর্জনা তৈরি হয়। এসব ময়লা-আবর্জনা নির্দিষ্ট একটি স্থানে ফেলে সেখান থেকে ভাগাড়ে নিয়ে ফেলা উচিত। কোনোভাবেই রাস্তার ওপর ফেলা যাবে না।
এ বিষয়ে বরিশাল সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতা কর্মকর্তা মো. ইউসুফ আলী বলেন, প্রতিদিন নগরী থেকে দুই টন ময়লা-আবর্জনা অপসারণ করা হয়। ডাস্টবিন ও সেকেন্ডারি ট্রান্সফার স্টেশন না থাকায় ময়লা-আর্বজনা রাস্তার ওপর ফেলা হয়। রাতের মধ্যে ময়লা-আবর্জনা সরিয়ে ফেলা হয়।
জনগণের ভোগান্তি হচ্ছে স্বীকার করে ইউসুফ আলী বলেন, আমরা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছে চাহিদা পাঠিয়েছি। ডাস্টবিনের জন্য বারবার তাগাদা দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ১৫টি ডাস্টবিন না দেওয়ায় ভোগান্তি হচ্ছে।
তিনি জানান, বিষয়টি সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকেও অবহিত করা হয়েছে। তিনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে ডাস্টবিন সরবরাহের জন্য তাগিদ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। দ্রুত সময়ের মধ্যে তারা ডাস্টবিন সরবরাহে ব্যর্থ হলে কার্যাদেশ বাতিল করে নতুন করে দরপত্র আহ্বানের নির্দেশ দেওয়া হবে। ইউসুফ আলী বলেন, আমরা চেষ্টা করছি দ্রুত সময়ের মধ্যে সমাধান করতে।