খুলনা শহরে দক্ষিণ দিকে প্রবেশপথ শিপইয়ার্ড সড়ক। রূপসা ট্রাফিক মোড় থেকে খানজাহান আলী (রহ.) সেতু পর্যন্ত ৪ কিলোমিটার এবড়োখেবড়ো সড়কটিতে চলাচলে এক যুগের বেশি সময় ধরে ভোগান্তি পোহাচ্ছে মানুষ।


বর্ষায় কাদাপানিতে নাস্তানাবুদ আর শুষ্ক মৌসুমে ধুলাবালির অত্যাচার। কয়েক দফায় মেয়াদ বৃদ্ধির পর চলতি বছরের ডিসেম্বরে শিপইয়ার্ড সড়ক প্রশস্তকরণ ও উন্নয়ন প্রকল্প শেষ হওয়ার কথা থাকলেও ৩০ শতাংশ কাজই বাকি। এরই মধ্যে প্রকল্প ব্যয় বেড়েছে প্রায় আড়াই গুণ। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সড়কের কাজ শেষ হওয়া নিয়ে সংশয় রয়েছে।


সরেজমিনে দেখা যায়, গুরুত্বপূর্ণ সড়কটির দুই পাশে অসংখ্য ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, জাহাজ নির্মাণ প্রতিষ্ঠান খুলনা শিপইয়ার্ড, সিমেন্ট ফ্যাক্টরি, অক্সিজেন প্লান্ট ও কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। সড়কটিতে বর্তমানে খুলনা ওয়াসা পয়োনিষ্কাশন প্রকল্পে পাইপলাইন স্থাপনে কাজ করছে। সড়কে রূপসা ট্রাফিক মোড় থেকে শিপইয়ার্ড স্কুল পর্যন্ত প্রায় ৩ কিলোমিটার অংশে বেজ টাইপ কনস্ট্রাকশনে কাজ বাকি রয়েছে। শিপইয়ার্ড স্কুল থেকে লবণচরা স্লুইসগেট পর্যন্ত ধীরগতিতে বেজ টাইপ-২-এর কাজ চলছে। মতিয়াখালী স্লুইস গেটে নতুন কালভার্ট নির্মাণের কাজ অর্ধেকাংশ শেষ হয়েছে। বিভিন্ন স্থানে সড়কে দুই পাশে ড্রেনে টপ স্লাপের কাজ, সংযোগসড়কে পুরাতন ড্রেনে ওয়াল ভেঙে ভার্টিক্যাল এক্সটেনশনের কাজ চলছে। জানা যায়, ২০১৩ সালে কেডিএর উদ্যোগে ৯৮ কোটি ৯০ লাখ টাকা ব্যয়ে শিপইয়ার্ড সড়কটি চার লেনে উন্নীতকরণ, ডিভাইডার ও কালভার্ট নির্মাণ প্রকল্প অনুমোদন হয়। তবে জমি অধিগ্রহণ জটিলতায় প্রথম দফায় প্রকল্প ব্যয় বৃদ্ধি হয় ১২৬ কোটি টাকায়। তারপরও দীর্ঘদিনে নির্মাণ শুরু না হওয়ায় ২০২০ সালে আবারও প্রকল্প ব্যয় বৃদ্ধি করে ২৫৯ কোটি ২১ লাখ টাকায় অনুমোদন দেওয়া হয়। পরে ২০২২ সালে ২২ ফেব্রুয়ারি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মাহবুব ব্রাদার্স প্রাইভেট লিমিটেড সড়ক প্রশস্তকরণের কাজ শুরু করে। গত ৩৭ মাসে প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি ৭০ শতাংশ।


এদিকে ধীরগতি উন্নয়নকাজে নির্দিষ্ট সময় কাজ শেষ করা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন এখানকার কাঠ ব্যবসায়ী মো. আনোয়ার হাওলাদার। তিনি বলেন, এ রাস্তা এখন গলার কাঁটা হয়ে দেখা দিয়েছে। ব্যবসাবাণিজ্য সব ধ্বংস হয়ে গেছে। কেডিএর নির্বাহী প্রকৌশলী আরমান হোসেন জানান, জমি অধিগ্রহণের জটিলতায় সড়কে কাজ শুরু করতে দেরি হয়। তবে দ্রুত কাজ শেষ করতে ঠিকাদারকে বলা হয়েছে।